কর্মক্ষেত্র সংগঠিত করনঃ সূচনা পর্ব (Organising your workplace: getting started)

আপনি এখন যেখানে জীবীকা নির্বাহের জন্য কাজ করছেন বা করতে যাচ্ছেন সেখানে হয়ত কোন সংগঠিত শ্রমিক সংগঠন নেই। তাহলে সংগঠন গড়ে তোলার জন্য আপনি কি করতে পারেন ? নিম্নের আলাপ আলোচনা কাজ করতে সহায়তা করবে।

এখন প্রায় সকল কর্মক্ষেত্রেই শ্রমিকদের জন্য সক্রিয় তেমন কোন সংগঠন খোঁজে পাওয়া যায় না । এটা নির্ভর করছে আপনি দুনিয়ার কোন দেশে বসবাস করছেন বা কোন কর্ম বিভাগে কাজ করছেন তার উপর। স্থান বিশেষে ট্রেড ইউনিয়নের উপস্থিতির কম বেশ হবেই। এমন ও হতে পারে যে সেখানে কেবল একটি নামমাত্র সংগঠন আছে, যারা কেবল নিজেদের কিছু সমস্যা নিয়ে মাঝে মাঝে তৎপর হন। সামগ্রীক ভাবে শ্রমিক শ্রেনীর বিজয়ের লক্ষ্যে তাঁরা তেমন কিছুই করেন না বা করার সামর্থ ও নেই । এমন ও হতে পারে যে সেই সংগঠনটি কিছু খারাপ শ্রমিকের কবলে পড়ে শ্রমিকদের স্বার্থ বিরোধী কাজেই ব্যবহার হচ্ছে ।

আশ্চর্যের বিষয় যে, শ্রমিকদের দ্বারা প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলীর মধ্যে একটি হল - "আমার কর্মক্ষেত্রে কী কী করা যেতে পারে তা উন্নত করার জন্য? কিছু একটা করা অসম্ভব বলে মনে হয়, মালিকেরা খুব শক্তিশালী।"

আমরা নিম্ন লিখিত বিষয় গুলো বিবেচনা করার জন্য সুপারিশ করবঃ

প্রশ্ন করুন আর উত্তর শোনুন

আপনি কোথা থেকে শুরু করবেন ? কিছু লোক যখন মনে করেন যে তাদের সাথে অন্যায় করা হয়েছে বা হচ্ছে তখন তাঁরা প্রচন্ডভাবে রেগে যান আর তাঁরা তাদের বসদেরকে জোরে জোরে গালাগাল দিতে শুরু করে দেন। এটা প্রায়স বিপদজনক হতে পারে। ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ তাদের লোকদেরকে সর্বোচ্চ সুরক্ষার ব্যবস্থা করবে, আপনি যখনই বসদেরকে প্রশ্ন করতে শুরু করবেন তখনই তাঁরা আপনার জন্য হুমকি হয়ে উঠবে। যখনই নানা বিভাগ ও কর্ম ক্ষেত্র থেকে প্রশ্ন উঠতে থাকে তখন আপনি ব্যবস্থাপকদের নিকট একজন ট্রাবলমেকার বা ঝামেলাপূর্ন লোক হিসাবে পরিগনিত হবেন। যদি ও এখন পর্যন্ত আপনি কোন বড় লড়াই সংগ্রামে নেতৃত্ব দেন নাই, তবু এটা দেখে অবাক হবেন যে ব্যবস্থাপকগন কত দ্রুত আপনার বিরুদ্বে চলে গেছে। তাই অন্যদের সাথে কথা শুরু করার আগেই এসব বিষয়ে সচেতন হতে হবে ।

সূচনায় আপনি কেবল আপনার সহকর্মীদের সাথেই কথা বলুন

তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন কাজের ক্ষেত্রে কি সমস্যা বিরাজমান। সেই সকল সমস্যা নিয়ে তাঁরা কি কি চিন্তা ভাবনা করেন? অন্যান্যরা ও সেই সকল বিষয়ে কি কি ভাবছেন । তাদের দৃস্টি ও মতামত শোনুন। বেশীর ভাগ মানুষই একজন সংগঠককে  উত্তেজনা সৃজনকারী বা গন্ডোগুল পাকানোর মত মানুষ হিসাবে দেখে থাকে। ( অবশ্য কোন কোন সময় এই ধরনের ভূমিকা সংগঠকদের পালন ও করতে হয়) তবে একজন ভালো সংগঠকের বৈশিস্ট্য হলো ভালো প্রশ্ন উত্তাপন করা এবং ভালো শ্রুতা হিসাবে নিজেকে মানুষের সামনে পেশ করা । ভালোভাবে শোনলে, আপনি কেবল নিজের কথা নয় আপনার সহকর্মীদের অনুভূতি ও অভিজ্ঞতা গুলো প্রকাশ করতে পারবেন । প্রধান উদ্বেগ গুলো প্রকাশ করা দরকার কিন্তু সকল সময়ে তা হয় না। কোন কোন সময় তাদের উদ্বেগ বা সমস্যা গুলো প্রতিক্রিয়াশীল ও হতে পারে। যেমন বিদেশী শ্রমিকের প্রশ্নে । তাদেরকে বিতারিত করার প্রশ্নে। এই সকল বিষয়ে সজাগ না থাকলে হিতে বিপরীত হবে। অবশ্যই প্রতিটি কাজ প্রগতিশীল হতে হবে ।

নোট সংরক্ষনঃ

শ্রমিকদের প্রধান সমস্যা সমূহ, আপনার কর্ম ক্ষেত্রের কোন বিশেষ ঘটনা যেমন- দুর্ঘটনা, শৃংখলার নামে ব্যবস্থাপক কর্তৃক কাউকে হুমকী ধমকী দেয়া ইত্যাদির রেকর্ড সংরক্ষন করতে হবে ।

অতীত থেকে শিক্ষা নিতে হবেঃ

শ্রমিকদেরকে সংগঠিত করার চেস্টা করুন, নানা প্রকার বিকল্প নিয়ে ও ভাবা যেতে পারে। হতে পারে এক সময় একটি সংগঠন এখানে ছিলো কোন কারনে ভেঙ্গে গেছে। এটাকে পুনরায় গড়ে তোলা যেতে পারে।

সংগঠিত করতে গিয়ে যা যা শিক্ষা হয়ে তা কাজে লাগান। দরকার হলে আপনার আশে পাশে যে সকল সংগঠন আছে তাদের নিকট থেকে শিখুন। বই, পুস্তক, ইন্টারনেট থেকে শিখুন । দরকার হলে ইন্টারনেটে আমাদের নানা প্রকার গ্রুপ আছে সেখানে জিজ্ঞেস করতে পারেন । আশা করি উত্তর পেয়ে যাবেন ।

সহযোগীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করুনঃ

প্রায়শই অবশ্যম্ভাবীভাবে এমন কিছু লোক থাকবে যারা অন্যদের তুলনায় আমরা যে সমস্যাগুলির মুখোমুখি হই, তার জন্য বেশি উদ্বিগ্ন এবং কিছু লোক এটি সম্পর্কে কিছু করতে চায়। যারা কয়েকজন এখন আপনার "প্রতিষ্ঠান" এর প্রাথমিক কোর সংগঠন গঠন করেন। আপনি দুইজন আগ্রহী ব্যক্তিদের সাথে আপনার সাথে কফি বা দুপুরের খাবারের জন্য  আমন্ত্রণ করতে পারেন, একে অপরের সাথে পরিচয় হোনএবং তারপর বলুন, "আপনি এই বিষয়ে কী ভাবছেন?" তারা যদি কিছু করার জন্য প্রস্তুত থাকে এবং শুধুমাত্র অভিযোগ না করে তবে আপনি সংগঠিত হওয়ার জন্য প্রায় প্রস্তুত হয়েছেন ভাবতে পারেন।

আপনার কর্মক্ষেত্র মানচিত্র তৈরী করুনঃ

জ্ঞানই শক্তি. অথবা অন্তত এটা শুরু করার শক্তি । আপনি আপনার কর্মক্ষেত্র এবং আপনার নিয়োগকর্তা সম্পর্কে আপনি যা করতে পারেন সবকিছু জানতে চেস্টা করুন। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী, শিক্ষার চলমান প্রক্রিয়া হবে।

আপনি যে কোম্পানীটির জন্য কাজ করছেন তার সম্পর্কে যতটুকু আপনি করতে পারেন তা চেষ্টা করে দেখুন। এটি্র একাধিক কারখানা বা দোকান আছে? এটি একটি পাবলিক কোম্পানি, কতজন এটির জন্য কাজ করে, এটির মালিক কে? কোম্পানিগুলিকে অ্যাকাউন্ট প্রকাশ করতে আইনত বাধ্য, তাই প্রাসঙ্গিক সংস্থার (যেমন যুক্তরাষ্ট্রে কোম্পানি হাউস) এইগুলি হোল্ড করা অত্যন্ত উপকারী হতে পারে। জানার চেষ্টা করুন  এর শক্তি সম্পর্কে এবং এটির জন্য কাজ করে এমন ব্যক্তিদের একটি তালিকা তৈরি করুন - উদাহরণস্বরূপ, একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা হল যে কর্মীরা 'কার্ড ছাড়া’ এবং আইনীভাবে কাজ করতে পারেন না। ফলে কিছু কর্মীদের অভিবাসন বিষয়ের সঙ্গে সমস্যা হতে পারে।

আপনি আপনার বিভাগের সাথে আপনার নিজের গবেষণা শুরু করা উচিত। ব্যবস্থাপকগন তাদের স্বাভাবিক কাজ এবং প্রকৃত উদ্যোগ গ্রহনকারী ব্যাক্তিবর্গ এবং  তাদের দুর্বল লিঙ্ক চিহ্নিত করতে পারেন  অনেক আগে থেকেই । প্রকৃতপক্ষে, প্রশিক্ষণ  পরিচালনার প্রধান লক্ষ্যগুলির একটি হল কর্মক্ষেত্রের মানসিক পরিবর্তন  ও উন্নয়ন করার কৌশলগুলি বিকাশ সাধন করা।

উদাহরণস্বরূপ, মাল্টি-ন্যাশনাল ইউনাইটেড পার্সেল সার্ভিস তার মানসিক ম্যানিপুলেশন কৌশলগুলিকে সূক্ষ্ম শিল্পে বিকশিত করেছে। ম্যানেজারদের প্রশিক্ষণের ম্যানুয়াল, প্রভাবশালী চার্টিং স্পিয়ার্স ইনফ্লুয়েন্স, কর্মক্ষেত্রকে অনানুষ্ঠানিক কর্ম সম্পাদনকারী  গোষ্ঠী চিহ্নিত করতে হবে, দুর্বল লিঙ্কগুলির সদ্ব্যবহার করতে হবে এবং শেষ পর্যন্ত এই গোষ্ঠীগুলি ভেঙে  দিয়ে তার ব্যবস্থাপনার সূবিধা সমূহ ব্যবহার করাতে হবে ।

যদিও বেশিরভাগ সংস্থাগুলি সূক্ষ্ম অরওয়েলিয়ান শিল্পে তাদের কৌশলগুলি বিকশিত করেনি, অনেকেই একই পদ্ধতিগুলির কয়েকটি ব্যবহার করে। স্পষ্টভাবে বক্তব্য রাখেন শ্রমিক, প্রগতিশীল বা আয়োজকদের স্থানান্তরিত করা হয়েছে, তা কি ব্যবস্থাপনায় উন্নীত হয়েছে বা শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য একত্রিত হয়েছে? কর্ম পরিষদ ভাঙা এবং নিয়মিত পুনর্বিন্যাস করা হয়? কর্মক্ষেত্রের লেআউট  তৈরীর ক্ষেত্রে কি শ্রমিকদের মধ্যে  আলোচনা করা কঠিন ছিল?

আপনি কি পায়ে হেঁটেই কর্ম ক্ষেত্রে যেতে পারেন ? কারা কারা তা পারেন ? কারা কারা পারেন না ? কর্ম ক্ষেত্রের শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য বা তা ভঙ্গের জন্য শাস্তি দেবার জন্য কি স্থানীয় লোক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এই সকল কিছুর প্রভাব কেমন? আপনি কি মনে করেন যে আপনি কারো পর্যবেক্ষনে আছেন ? আপনি এসকল বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করলে কাজের জন্য কিছু জায়গা পেয়ে যাবেন। আর আপনি ও শ্রমিকদের মাঝে একটি জায়গা করে নিতে পারবেন। বিরোধীদের মাঝে ফাটল ধরানোর পথ ও আবিস্কার করতে সক্ষম হবেন।

আপনি ক্রমে বলতে শুরু করুন আপনার নিকট কিছু বার্তা আছে যা সকল কর্মীদের নিকট তা পৌঁছানোর জন্য আপনার পর্যাপ্ত সময় ও সম্পদ নেই । আপনি যদি ন্যাচারাল সংগঠকদেরকে আপনার পাশে পান তবে আপনার কাজ অনেক সহজ হয়ে যাবে। আপনার বার্তা সহজেই অনেকের নিকট পৌঁছে যাবে। আপনি খুব সহজেই সকলের মাঝে একটি নেটওয়ার্ক গরে তুলতে পারবেন । যারা তাদের চার পার্শে একটি প্রভাব বলয় গড়ে তোলতে পারবেন ।

যে সকল লোক সরাসরি কাজে জড়িত নয় তাদের কিছু বিশেষ সুবিধা আছে। আপনি আপনার কাজের সুবিধার জন্য কিছু বিষয়ে একটি সুনির্দিস্ট পরিকল্পনা তৈরী করতে পারেন। যারা বাইরের লোক তাদেরকে দিয়ে সরাসরি কিছু কিছু ক্ষেত্রে আঘাত করতে পারেন। যা অনেক সময় সরাসরি কর্মে জড়িত লোকদেরকে দিয়ে সম্ভব হয় না ।

গ্রুপ সংগঠকদের পাশাপাশি অন্যান্য লোকদেরকে ও সংগঠিত করা যাবে। যাদের মাঝে উদাসিনতা, বিচ্ছিনতাবোধ, ও প্রচলিত ইউনিয়ন ব্যবস্থার বিরোধী মনোভাবাপন্ন লোকদেরকে কাছে টানা সহজতর হবে। তাদের ক্ষমতাহীনতা ও ভয় ভীতি দূর করা যাবে । যদি যৌথভাবে কার্যক্রম শুরু করা যায়, তবে সকলের মাঝেই নিরাপত্তার ধারনা শক্তিশালী হবে। সকলের মন থেকেই দূর হবে ভয় ভীতি ও হতাশার মনোভাব। আপনার সাথে যদি এমন লোক ভীরে যায় যারা সত্যিকার ঐক্যের পথে মারাত্মক বাঁধা। তবে সংগঠন ও সামাজিক শক্তি ব্যবহার করার ক্ষেত্রে একেবারেই ভয় পাবেন না । তাকে পিছনে ঠেলে দিন। তা হবে একজন সুদক্ষ সংগঠকের কাজ। একজন সংগঠক হয়ে উঠবেন সকলের বন্দ্বু ও শুভাকাঙ্ক্ষী।

ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা করাঃ

কর্ম ক্ষেত্রের সংগঠনের ক্ষেত্রে এই ধরনের কর্মধারা ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখবে। এই প্রক্রিয়া প্রচলিত সমস্যা গুলো সমাধানে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। সমস্যা সমূহ ব্যাক্তিগত, ইউনিয়ন পর্যায়ে, বা প্রকৃতিক সংগঠনের ক্ষেত্রে ও হতে পারে। ফলে অনেকেই হতাশ ও আনুগত্য দেখাতে অনিহা প্রকাশ করতে পারেন।   সমস্যার সমাধান না হলে অনেক সম্ভাবনাই নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

যদি ও সংগঠন নিজেদের ঐক্য প্রদর্শনের জন্য একটি উপাদান তবে তা ব্যবস্থাপককের পক্ষ থেকে হুমকি প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারে। প্রচলিত সমস্যা সমূহ সমাধানের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে পারে। ব্যবস্থাপকগন যখন বুঝতে পারবেন যে সমস্যা সমূহ একক কোন ব্যাক্তির নয় বরং সকলের সমস্যা তখন তার সমাধানের জন্য এগিয়ে আসবেন। তাঁরা অনুধাবন করবেন যে এগিয়ে যাবার জন্য এই সমস্যা সমাধান অপরিহার্য। নইলে তা বিদ্রোহ বিক্ষোভের জন্ম দিতে পারে।

এবার শুরু হোক সংগঠিতঃ

সভাঃ

আপনি যখন মনে করবেন যে একটি সভায় মিলিত হবার সময় হয়েছে তখনই সভার আয়োজন করবেন। কেহ কেহ সভায় যোগদান না করলে অবাক বা হতাশ হবেন না । যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সভায় মুল বিষয় গুলো আলোচনা করুন । যা শ্রমিকদের সাম্পর্কিত তা সরাসরি আলোচনায় যুক্ত করুন । শ্রমিকগন যেন সকল বিষয়ে নিজেদেরকে যুক্ত করতে পারেন সেই বিষয় গুলো ও আলোচিত হবার পরিবেশ তৈরী করুন । যারাই সভায় এসেছেন তাদেরকে বুঝতে দিতে হবে যে এই প্রক্রিয়ার সাথে কম বেশী সকলেই সম্পর্কিত আছেন । ব্যবস্থাপকগন কি করছেন সেই বিষয়ে ও আলোকপাত করুন । এমন অনেক বিষয় আছে যা শ্রমিকগন এখনো অবগত নন ।

ইউনিয়নঃ

আপনি অবহিত করুন যে, আপনি ও আপনার সহ কর্মীগন একটি অফিসিয়াল ট্রেড ইউনিয়নের আওতায় ব্যবস্থাপকদের সাথে তালিকা ভুক্ত হতে চেস্টা করছেন । সেই কাজটি কতটকু কঠিন বা জটিল তা নির্ভর করবে আপনার কর্ম ক্ষেত্রের অবস্থার উপর । সেই কর্মস্থলে কর্মীর সংখ্যা কত, এবং আর কি কি সংস্থা আছে, যারা সংঠনের মতই কাজ করছে । এছাড়া একটি ইউনিয়নের মাধ্যমে আপনি ও আপনার সহকরমীগন কি বিজয় অর্জন করতে পারবেন ? তাই ইউনিয়ন ছাড়া ও আরো কাদেরকে জড়িত করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে । অফিসিয়াল ট্রেড ইউনিয়ন ছাড়া ও যাদেরকে যুক্ত করা যায় তাদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলার জন্য কাজ করতে হবে এবং আইনগত ভাবে ও যাদেরকে জড়িত করলে ইতিবাচক ফলাফল আসবে তাদের সাথে ও আলোচনা করা যেতে পারে ।

প্রচারঃ

কিছু গরুত্বপুর্ন দিক তুলে ধরে একটি লিফলেট তৈরী করা যেতে পারে। এবং তা সহকর্মী ও বন্দ্বুদের মাঝে বিতরন করার ব্যবস্থা করা যায় । যার ইতিমধ্যে এই আপনার কর্মস্থল ত্যাগ করে চলে গেছেন তাদের নিকট ও লিফলেট বিতরন করা যায়। দরকার হলে প্রাথমিক ভাবে তা গোপনীয় হতে পারে । এই কাজের ফলে ব্যবথাপকদের নজরে আসবেই যে কিছু শ্রমিক নিজেদের দাবী দাওয়া নিয়ে দল বদ্ব হচ্ছে । ফলে তাঁরা ও সতর্ক হয়ে উঠবেন ।

দাবীঃ

যখন উপযুক্ত মনে হবে ( তা কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস পর ) তখন আরো একটি বড় সভার আয়োজন করা যেতে পারে। সেই সভাকে শ্রমিকদের দাবী ও অভিযোগের তালিকা প্রস্তুত করার কাজে ব্যবহার করুন । সেই সভায় কিছু প্রতিনিধি থিক করুন যারা ব্যবস্থাপকদের নিকট তাদের সকল দাবী দাওয়া গুলো তুলে ধরবেন ।

সমর্থনঃ

প্রচারনা চালাবার সময়ে যদি কোন সমস্যা দ্বারা বাঁধা প্রাপ্ত হন তবে আপনি আপনার কর্স্থলের বাহিরের লোকদের সমর্থন আদায়ের চেস্টা করুন । তাদের মধ্যে হতে পারে নানা ধর্মীয়, সামাজিক, রাজনৈতিক ও এনার্কিস্টদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করুন। তাঁরা আপনার জন্য লিফলেট ছাপানো, বিতরন এবং জনগণের অংশ গ্রহনে বাস্তব সম্মত সহায়তা করতে পারেন।

জবাবদিহিতাঃ

দাবী আদায়ের প্রশ্নে কোন ভাবেই যেন বসদের সাথে আপোষরফা করতে না পারে সেই দিকে সবিশেষ সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। পিছনের দরজা দিয়ে নানা প্রকার কর্মকান্ড ঘটে যেতে পারে। তা ও খেয়াল রাখতে হবে। প্রতিটি সভা অবশ্যই খোলামেলা হতে হবে। ট্রান্সপারেন্ট করতে হবে ।

তবে, সেই কাজ গুলো খুব সহজ নয়, আবার অসম্ভব ও নয় !

কর্মীরা কিন্তু ভালো করেই জানেন যে তাদের কর্মকান্ডের জন্য তাঁরা চাকুরী হারাতে পারেন বা তাদের চাকুরী হুমকিতে পড়তে পারে। অতি সহজে কাউকে বিশ্বাস করা যাবে না । আলোচনা করুন কিছু লোক চাকুরী হারিয়ে ফেললে কি কি করতে হবে। হরতাল করা, কর্মক্ষেত্র দখল করার মত সিদ্বান্ত নিতে হতে পারে। তবে, যে সকল দেশে এখনো শ্রমিক ইউনিয়ন করার অধিকার স্বীকৃত নয়; সেখানকার কথা আলাদা । সেই সকল স্থানে শ্রমিকদেরকে ব্যবস্থাপকদের বিরুদ্বে সংগঠিত করা আরো জটিল হবে। সেই পরিস্থিতিতে কি কি করতে হবে তা ও সামনে বলা হবে ।

ইতিহাস সংরক্ষণঃ

সংগঠক হিসাবে যে সকল কাজ করেছেন তার রেকর্ড  যথাযত ভাবে সংরক্ষণ করুন- শ্রমিকদের কাজ করতে গিয়ে যে সকল অভিজ্ঞতা হয় তা খুব কমই রেকর্ড করা হয় । ফলে সেই মূল্যবান অভিজ্ঞতা হারিয়ে যায় । যা একেই পরিস্থিতিতে পুনঃব্যবহার করা সম্ভব । কাজ করতে গিয়ে অনেক কিছু অর্জন ও বর্জন করার মানসিকতা ও থাকতে হবে।