এ কে এম শিহাব অনূদিত গ্রেগরী পেট্রোভিচ ম্যাক্সিমফ প্রণীত প্রোগ্রাম অব এনার্কো-সিন্ডিক্যালিজম পুস্তকের ধারাবাহিক-৮

এ কে এম শিহাব অনূদিত গ্রেগরী পেট্রোভিচ ম্যাক্সিমফ প্রণীত প্রোগ্রাম অব এনার্কো-সিন্ডিক্যালিজম পুস্তকের ধারাবাহিক-৮

দ্বিতীয় বিভাগঃ রাজনৈতিক পরিমন্ডল

অধ্যায়ঃ ৩ । প্রতিরক্ষা সংস্থা

ক) সেনাবাহিনীঃ

সাধারন জনগণের সামগ্রীক অংশগ্রহন ছাড়া কোন সত্যিকার বিপ্লব সম্ভব নয়। যদি কোন বিপ্লবী কাজে তা অনুপস্থিত থাকে তবে তাকে কোন ভাবেই আর বিপ্লব বলা যায় না; তাকে বিদ্রোহ, বা ক্যুদেতা বলা যেতে পারে। তার বেশী কিছু নয় । বিদ্রোহ বা অভ্যুত্থান কৃত্রিম ভাবে সৃজন করতে হয়। তবে বিপ্লবকে প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি করতে হয়, সেই বিপ্লবী কার্যক্রম কেবল বিপ্লব সাধনে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে। সেই প্রক্রিয়াকে গন অভ্যুত্থান বলা যায় না । একটি বিপ্লবকে সফল করার জন্য দরকার হলো সর্বস্থরের মানুষকে বিপ্লবী আন্দোলনে অংশ গ্রহন করানো। এই পদক্ষেপই কেবল বিপ্লবী কর্মের মাইল ফলক হয়ে থাকে, এমন কি বিপ্লব কোন কারনে ব্যার্থ হলে ও তা সাধারন মানুষকে শতাব্দির পর শাতাব্দি জোড়ে প্রেরণা যুগিয়ে যায় ।  এই ধরনের বিপ্লব পরবর্তী বিপ্লব সমূহকে ও এগিয়ে যেতে অনুপ্রানিত করে থাকে। যেমন- ইংলিশ, ফ্র্যান্স এবং রাশিয়ান বিপ্লব।

বিপ্লব পুরাতন ব্যবস্থা, পুরাতন সামাজিক কাঠামো এবং জীবন যাত্রার ধরন ও প্রকৃতিকে পাল্টে দেয়। এই প্রক্রিয়াগত কারনে বিপ্লবের কালে কিছু অনিয়ম ও বিশৃংখলা দেয়া দিতে পারে। সেই পুরাতন সমাজ ব্যবস্থা ভাঙ্গার সময় কিছু বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে তাকে অবদমন করা ঠিক নয়- যদি পুরাতন ব্যবস্থার অনুসারীরা শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসার চেস্টা চালায় তবে তাকে অবশ্যই কঠিন ভাবে দমন করতে হবে । তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নতুন ব্যবস্থার প্রবর্তন করে সামাজিক শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সময় ক্ষেপন করা সমীচীন নয়। তাই সেই সময় ক্রমাগত অর্থনৈতিক কর্মসূচী হাতে নিয়ে জনগণের চাহিদা পুরন করতে কারপন্য করা যাবে না । বিপ্লবীদেরকে প্রমান করতে হবে যে এরাই হলো সত্যিকার জনগণের বন্দ্বু বা সহায়ক গুষ্টি বা রক্ষক বা বন্দ্বু।

বিপ্লবীদেরকে প্রথমেই নিজদের সামরিক সংস্থার ভিত্তিমূল পাকাপোক্ত করতে হবে। তাই প্রথমেই সামরিক বাহিনীর সকল অস্ত্র সস্ত্র নিজেদের আয়ত্বে নিয়ে আসতে হবে। পুরাতন সামরিক বাহিনীকে ভেঙ্গে দিতে হবে। নিজেদেরকে সামরিক কায়দায় গড়ে তুলতে হবে। সকল কল কারখানা ও গ্রাম নিজেদের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসতে হবে। তবে গৃহযুদ্ব শুরু হলে সকল ক্ষেত্রে তা করা কিছুটা কঠিন হতে পারে।  সেই সময়ে অন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদি শক্তি বিপ্লবের বিপক্ষ শক্তিকে সমর্থন ও শক্তি যোগাতে পারে ।  এরা সামাজিক বিপ্লবের মধ্যে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে ।  এই পরিস্থিতিতে সামরিক বিজ্ঞানের আলোকে সামরিক সংস্থা গড়ে তুলতে হবে, তবে অবশ্যই বিপ্লবের লক্ষ্য থেকে সরে যাওয়া যাবে না । বিপ্লবের মৌলিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতেই হবে ।

বিপ্লবের মাধ্যমে কেবল প্রতিরক্ষা বিভাগকে পৃথকি করন করলই হবে না; তাকে বিশেষ ভাবে গড়ে তোলা চাই। প্রতিরক্ষা বাহিনীর লোকেরা ও বিপ্লবীকাজে অংশ নিবেন, তাঁরা বিপ্লবের সূচনা পর্বে খুবই গুরত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করার সুযোগ পাবেন। তবে তাঁরা প্রকৃত যুদ্বের পরিস্থিতি বিবেচনায় নিজেরা হতাশ  হবেন না। সেই অবস্থায় সকল বিদ্রোহ ও বিশৃংখলাকারীদেরকে যথাযথ ভাবে মোকাবিলা করার জন্য প্রতিরক্ষা কর্মীগন সবিশেষ গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করবেন। সেই ক্ষেত্রে সকল প্রকার আধুনিক যন্ত্রপাতি ও কৌশল ব্যবহার করা হবে। তবে প্রচলিত বুর্জোয়া রাস্ট্রের সেনাবাহিনী, সোভিয়েত লাল ফৌজ বাহিনীর মত রীতিনীতি কোন ভাবেই অনুসরন করা হবে না । বিপ্লবী প্রতিরক্ষা বাহিনীর গঠন ও বিকাশের ক্ষেত্রে দুটি মৌলিক নীতি মেনে চলা হবে। প্রথমতঃ তা কোন ভাবেই স্বাধীনতার জন্য হুমকী হবে না। দ্বিতীয়তঃ প্রতিরক্ষার জন্য অপর্যাপ্ত শক্তির অধিকারী হবে না ।

নিয়মিত সেনাবিহিনীর বদলে এনার্কিস্টগন নতুন ধরনের মিলিশিয়া বাহিনীর প্রস্তাব করতে চায়। একটি আধুনিক মিলিশিয়া বাহিনী গড়ে তোলে রাখার জন্য নিম্ন লিখিত নীতিমালা অনুসরন করা হবেঃ

১) ১৮ থেকে ৪৫ বছরের সকল শ্রমিকগন সামরিক প্রশিক্ষন গ্রহন করবেন। তাঁরা সকলেই অস্ত্র পরিচালনায় সক্ষম হবেন।

২) ১৮ থেকে ৪৫ বছরের সকল নারীদেরকে মেডিক্যাল সেবার জন্য নিয়োগ প্রদান করা হবে, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষন দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। তাঁরা মিলিশিয়া বাহিনীর সাথে সংযুক্ত করা থাকবে।

৩) মিলিশিয়া বাহিনীর ব্যারাকে থাকার জীবনের ও অবসান হবে।

৪) মিলিশিয়া বাহিনীর প্রশিক্ষিন তা হোক সামরিক বা চিকিৎসা সংক্রান্ত সেই গুলো বিশেষ কোন ব্যারাকে হবে না । সকল প্রকার প্রশিক্ষন স্ব স্ব কর্মস্থলে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। শ্রমিকদেরকে কারখানায়, কৃষকদেরকে খামারে এবং ছাত্র/ছাত্রীদেরকে বিদ্যালয়ে সকল সামরিক প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হবে ।

৫) প্রতি বছর ত্রিশ দিনের জন্য সকলের জন্যই এক প্রকার  প্রশিক্ষন মূলক সামরিক মহড়ার ব্যবস্থা করা হবে।

৬)  শ্রমিক শ্রেনীর মিলিশিয়া বাহিনী তাদের  কমিটিতে সামরিক বিশেষজ্ঞ, মহাসমিতির উৎপাদন কমিটির সংযোগ স্থাপন করা থাকবে। এই কিমিটিতে আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনার ও ব্যবস্থা রাখা হবে। যারা সাম্য ও স্বাধীকার নিশ্চিত করবেন।

৭) সরবরাহ বিভাগ খোলা হবে। এই বিভাগের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে মহাসমিতির সদস্যবৃন্দ এবং সামরিক বিভাগের লোকেরা। যাদের কাজ হবে সামগ্রীক ভাবে পন্য সরবরাহ করা ।

8) শ্রমিক শ্রেনীর মিলিশিয়া বাহিনী নির্বাচনের মাধ্যমে গঠন করা হবে। যারা সুদক্ষ ও জনপ্রিয় তাদেরকে নিয়েই গঠিত হবে এই বাহিনী।

৯)  সামরিক বিভাগে যারা নিয়োজিত থাকবে তাদেরকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষন প্রদানের জন্য প্রশিক্ষক ও কন্ডার নিয়োগ দেয়া হবে। তাদের কাজ হবে কল কারখানা ও গ্রামে সামরিক প্রশিক্ষনের ব্যবস্থায় অংশ গ্রহন করা। তাঁরা জনগণকে স্ব স্ব কাজে নিয়োজিত অবস্থায় সময় বেড় করে উৎপাদন মূখী কার্যক্রমের পাশাপাশি সামরিক কর্মকান্ডে ও সুদক্ষ করে গড়ে তোলা । তবে তাঁরা ও গ্রাম এবং কারখানা কমিটির সুপারিশ ক্রমে স্বীয় পদ হারাতে পারেন ।

১০) কোন দেশ সামাজিক বিপ্লব সাধিত হবার পর যদি দেখা যায় যে পার্শ্ববর্তী কোন বুর্জোয়া দেশ আক্রমন করতে পারে তবে  নাগরিকদেরকে সামরিক প্রশিক্ষন দিয়ে যে কোন প্রকার পরিস্থিতি মোকাবিলার ব্যবস্থা গ্রহন  করা হবে। সাবেক সকল সুদক্ষ অফিসার ও জেনারেলদেরকে বিপ্লবী কাজে বিশেষ করে প্রতিরক্ষার কাজে নিয়োজিত করা হবে। চলমান উৎপাদন মূখী কার্যক্রমের পাশাপাশি তাঁরা সামরিক ক্ষেত্রে ও গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখবেন।

১১) উপরে উল্লখিত শ্রমিক মিলিশিয়াদের সাংগঠনিক কাঠামোর কারনেই সামরিক ও উৎপাদন সংক্রান্ত কার্যক্রমের একটি সমন্বয় হওয়া দরকার। তাই প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সাংগঠনিক দিক গুলোর মাঝে সমন্বয় সাধন করতে হবে।

১২) প্রচলিত সকল কল কারখানা সাধারন সাম্যবাদি অর্থনীতির সাথে সম্পৃক্ত করে দেয়া হবে। তাঁরা সাধারন উৎপাদন ব্যবস্থা ও সামরিক উৎপাদন মূখী কার্যক্রমকে সমন্বয় করে পরিচালনা করবেন। শ্রমিকদের মহা সমিতি বা কনফেডারশন সকল কার্যক্রমের পরিচালনায় নেতৃত্ব দিবে।

এই পদ্বতীতে সামরিক বাহিনী ও সামরিক অস্ত্রসস্ত্রকে বিপ্লবী সুরক্ষার জন্য কাজে লাগানো হবে। তবে কোন ভাবেই যেন জনগণের স্বাধীকার ও সাম্যকে নস্ট করতে না পারে সেই দিকে সবিশেষ সতর্ক নজর রাখা হবে। শ্রমিকদের মিলিশিয়া বাহিনী যেন আমলাতন্ত্রের খপ্পরে না পরে বা ভাড়াটে সৈনিকে পরিনত না হয় তার জন্য একটি পৃথক বিভাগ সকল সময় কাজ করে যাবে ।

খ) জনগণের নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ শান্তি বজায় রাখাঃ

এনার্কিস্টগন একটি নতুন সমাজ গড়তে চায়, যেখানে গঠন প্রক্রিয়ার ভেতরই সাধারন মানুষের সার্বজনীন অধিকার স্বীকৃত থাকবে। মানুষের স্বাধীকার ও সাম্য তখনই গড়ে উঠতে পারে যখন পারস্পরিক শ্রদ্বা ও সংহতি বজায় থাকে। কোন ভাবে কারো অধিকারকে অবজ্ঞা করার স্থান থাকবে না – আর তাকেই বলা যায় সত্যিকার প্রাকৃতিক ন্যায় বিচার ।

স্বাধীকার সমতা থেকে অবিচ্ছিন্ন, আবার সমতা ও স্বাধীকার থেকে অবিচ্ছিন্ন। সমতা ছাড়া স্বাধীকার একটি আনুস্টানিক ঘোষনা মাত্র।এটা সত্যিকার অর্থে একটি সংখ্যালঘু মানুষের দ্বারা সংখ্যাগুরু মানুষের উপর ছাপিয়ে দেয়া শাসন ছাড়া আর কিছুই নয়। এই ধরনের শাসন ব্যবস্থা ও স্বাধীকার মুলত রাস্ট্র ভিত্তিক পুঁজিবাদের নামান্তর। সাম্যবাদ বিহীন সমাজ ব্যবস্থা রাস্ট্র ভিত্তিক সমাজবাদি সমাজেরই অপর নাম । এই সকল ব্যবস্থায় ব্যাক্তির কোন স্বাধীকার ও সাম্য থাকে না । তাই এনার্কিস্টগন একটি প্রাকৃতিক সাম্যবাদি সমাজ কায়েম করতে চায় । যেখানে সাম্য ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে । মানুষের চিন্তার জগত ও আচরনকে মুক্ত করা হবে ।

প্রাকৃতিক কোন অধিকার কোন আইনই অস্বীকার করতে পারেনা, তার কার্যকারিতাকে ও কেহ সীমাবদ্ব করতে চায় না । তাই সম্প্রাদায়গত কোন কাঠামো বা  উন্নত সাম্যবাদি সমাজ এবং এনার্কিস্ট সমাজ ব্যবস্থায় প্রকৃতিক আইনের চর্চা করা হবে ব্যাপক ভাবে । প্রচলিত যে লিখিত আইন আছে তা বাতিল করে দেয়া হবে। তবে কনফেডারেশনের জন্য লিখিত কিছু বিধিবিধান থাকবে। তবে সকল ক্ষেত্রেই প্রাকৃতিক বিষয়বলীকে ভিত্তি করে সিদ্বান্ত গ্রহন করা হবে।

প্রচলিত আধুনিক সমাজে যত অপরাধ হয় তার বেশীর ভাগ অপরাধেরই উৎস হলো ব্যাক্তিগত সম্পত্তি সম্পর্কিত। ফলে মানুষের প্রাকৃতিক যে অধিকার সমূহ আছে তা উপেক্ষা করেই ক্ষমতাসীনদের বিচার আদালতের কাজ করতে হচ্ছে। তবে এনার্কিস্টগন  যে সমাজ কায়েম করতে চায়, সেখানে কোন ব্যাক্তিগত সম্পত্তির অস্থিত্ব থাকবে না বলে অনেক অপরাধ এমনিতেই তিরোহিত হয়ে যাবে। যে সকল অপরাধ হতে পারে বলে ধারনা করা হয় তা হলো মানসিক সমস্যা সংক্রান্ত বা ব্যাক্তির পশ্চাৎপদতা বিষয়ক অপরাধ । আর সেই সকল অপরাধ নিবারনের জন্য থাকবে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত টিম।

অন্তর্বতীকালিন সময়ে আরো কিছু অপরাধ হতে পারে- তা হলো স্বাধীকার ও সাম্য সংক্রান্ত- যা সাধারন মানুষকে ও প্রভাবিত করতে পারে। যখন সাম্যবাদ কায়মের জন্য এনার্কিস্টগন পূর্ন সাম্যবাদ কায়েমের জন্য লড়াই করে তখন হয়ত কিছু লোক গৃহ যুদ্ব বাঁধিয়ে সামাজিক অস্থিরতা সৃজন করার চেস্টা করতে পারে। যে সকল ব্যাক্তিগন স্বাধীকার ও সাম্যের বিরুদ্বে কাজ করবেন তাদেরকে সামায়িক ভাবে সকল মানবিক মর্যাদা দিয়েই কাজ থেকে বিরত রাখা হবে বা অন্তরীন করে দেয়া হবে বা  স্থানান্তরে প্রেরন করা হবে । সকল বন্দ্বীদেরকে স্বাধীকার ও সাম্যের বিরোধী এবং অপরাধী মানুষ হিসাবে চিহ্নিত করা হবে। এই সকল কার্যক্রম শ্রমিক মিলিশিয়াদের  কাউন্সিলের মাধ্যমে সম্পাদিত হবে ।

সামগ্রীক সমজের শিক্ষার জন্য ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে যেন মানুষের মন থেকে প্রতিশোধ মূলক চিন্তার অবসান হয়। আইন প্রয়োগের মাধ্যমে প্রতিশোধ নয় সংশোধনই হবে আসল উদ্দেশ্য। আর তা নিশ্চিত করতে শিক্ষা, চিকিৎসা প্রদান করা ও সমাজ থেকে অপ্রত্যাশিত কর্মকান্ডকে বিতারন করার ব্যবস্থা থাকবে। তাই প্রচলিত বুর্জোয়া ব্যবস্থায় যেমন আইন আদালত আছে একটি এনার্কিস্ট সমাজে থাকবে না। সকল কিছুই উৎপাদন মূখী হবে। ছোট ছোট অপরাধের জন্য কোন আদালত বা কাউন্সিলের দ্বারস্থ হবার দরকার নেই । তা সধারন সালিশের মাধ্যমে সমাধান করে দেয়া হবে ।

সমাজে যদি এমন কোন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যে, সামাজিক বিধি বিধানের লংগন যেমন- খুন হত্যা বা মানুষের সাম্য ও স্বাধীকারের অধিকার হরন ইত্যাদি ধরনের অপরাধ সংগঠিত হয় তবে তা সম্প্রদায়গত কমিটি তার বিচার করবেন। সেই বিচারিক কমিটিতে থাকবেন- সমবায় সমিতির প্রতিনিধি, কমিউন প্রতিনিধি, মনোবিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক ও স্থানীয় গন্য মান্য ব্যাক্তিবর্গ।  সেই বিচারিক কমিটির সদস্য ও যখন প্রয়োজন রদ বদল করা যাবে। কোন কারাগার থাকবে না । অপরাধীদেরকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও মানসিক কাউন্সিলিং দেয়া হবে। এছাড়া ক্ষেত্র বিশেষে তাদেরকে উৎপাদন কন্দ্রে প্রেরন করা হবে। যেখানে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত থেকে তাঁরা মুক্তি পাবেন ।

এনার্কিস্ট সমাজে ব্যাক্তিগত সম্পত্তি ও রাস্ট্রের সকল অঙ্গ সমূহ  বিলুপ্তি করে দেয়া হবে, সেখানে কোন পলিশ থাকবে না । কমিউন গুলি নিজেদের নিরাপত্তা ও শান্তি রক্ষার দায়িত্ব নিজেদের হাতেই পরিচালনা করবে। সেই ক্ষেত্রে সকল জনগণের অংশগ্রহন নিশ্চিত করা হবে। পাড়া, মহল্লা ও সড়কের নিপত্তার দায়িত্ব পালনের জন্য নির্ধারিত কমিটি থাকবে। ক্রমধারা অবলম্বন করে দায়িত্ব পালন করবেন। ফলে প্রচলিত নিরাপত্তা, শান্তি ও শৃঙ্খলার জন্য সকল কিছুকেই নতুন করে সাজিয়ে তুলা হবে । প্রতিটি কার্যক্রমের যৌক্তিকতা ও স্বনির্ভরতা নিশ্চিত করা হবে। এই আত্মসুরক্ষার পদক্ষেপ সমূহ একটি মুক্ত সাম্যবাদি সমাজ বিনির্মানের উদাহরন হয়ে উঠবে।


Share Tweet Send
0 Comments
Loading...
You've successfully subscribed to Bangladesh ASF
Great! Next, complete checkout for full access to Bangladesh ASF
Welcome back! You've successfully signed in
Success! Your account is fully activated, you now have access to all content.