চা শ্রমিক বিদ্রোহের রক্তস্নাত ইতিহাস
হৃদেশ মুদি ::
আজ ঐতিহাসিক ২০ মে। চা শ্রমিক দিবস। সারা বিশ্ব আজ বিপর্যস্ত প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের আক্রমণে। বর্তমান পরিস্থিতিতে যখন সমস্থ শ্রেণী পেশার মানুষকে লড়তে হচ্ছে প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে তখন দেশের শ্রমজীবী, খেটে খাওয়া মানুষদের তার সাথে লড়তে হচ্ছে চিরচেনা অভাব, দারিদ্রতা আর মালিকশ্রেণীর শোষন নিপিড়নের বিরুদ্ধে। শ্রমিকশ্রেণীর কাছে করোনার আক্রমন নতুন কিংবা সাময়িক বিষয় হলেও মালিক শ্রেণীর শোষণ, নির্যাতন তার কাছে যুগযুগান্তর থেকে বহমান এক নিত্তনমিত্তিক বাস্তবতা। ফলে মুক্তির লক্ষে শ্রমিকশ্রেণীকে বারবার ঐক্যবদ্ধ হতে হয়েছে, লড়তে হয়েছে, ক্সতরি করতে হয়েছে নতুন লড়াইয়ের ইতিহাস। আজ থেকে ৯৯ বছর আগে এমনি এক সংগ্রামী ইতিহাস রচনা করেছিল প্রতিবাদী হাজারো চা শ্রমিক। ১৯২১ সালের এই দিনে শত শত চা শ্রমিককে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করে বৃটিশ সরকার ও বাগান মালিকদের স্বার্থ রক্ষাকারী গোর্খা বাহিনী। মালিকশ্রেণীর অত্যাচার নিপিড়ন আর অমানবিক নির্যাতনের প্রতিবাদে হাজার হাজার চা শ্রমিক কর্তৃক সংগঠিত ঐতিহাসিক “মুল্লুকে চল” আন্দোলন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়ে এই বর্বর হত্যাযজ্ঞের পথ বেছে নেয় গোর্খা বাহিনী। হাজারো শ্রমিকের রক্তে রঞ্জিত ইতিহাসের এই দিনটিকে “চা শ্রমিক দিবস” হিসেবে পালন করা হয়।
আজকের দিনে নয়নাভিরাম পরিপাটি যে চা বাগান দেখে আমরা মুগ্ধ হই, একটা সময় তা ছিল জনমানবহীন দুর্গম জঙ্গল। এই উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভাগ্যান্বেষনের লক্ষ্যে আসা অসহায় দরিদ্র কৃষক এবং তাদের পরবর্তী প্রজন্মের শত বছরের নিরন্তর সংগ্রামের ফল আজকের এই নয়নাভিরাম চা বাগান। ভারতবর্ষে চা শিল্প বিকাশের একটা দীর্ঘ অতীত আছে। যতদূর জানা যায়, একটা সময় চীন ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোথাও চা চাষের প্রচলন ছিল না। ইংরেজরা ১৮৩৮ সালে ভারতবর্ষে চা চাষের সূচনা করে। পরবর্তীতে ১৮৫৪ সালে সিলেটের মালনীছড়া চা বাগানের মাধ্যমেই এই অঞ্চলে বাণিজ্যিক ভাবে চায়ের চাষ শুরু হয়। উৎপাদনের সাথে শ্রমের সম্পর্ক অঙ্গাঅঙ্গীভাবে জড়িত। আর মালিকি ব্যবস্থায় উৎপাদনের প্রধান উদ্দেশ্য মুনাফা। এই উৎপাদন আর মুনাফার সমাধান খুজতে গিয়ে মালিক শ্রেণী ক্সতরী করল শ্রমিক শোষনের এক নির্মম ইতিহাস। সস্তা শ্রম কিনতে গিয়ে ইংরেজরা শুরুতেই প্রতারণার পথ বেছে নেয়। আজীবন কাজ করার শর্তে চুক্তিবদ্ধ করে মধ্য ভারতের দরিদ্র ও দুর্ভিক্ষ পীড়িত সাওতাল, লোহার, কুর্মী, মুন্ডা, কুলবিল প্রভৃতি আদিবাসী গোষ্ঠী এবং উড়িষ্যা, বিহার, মাদ্রাজ, মধ্য প্রদেশ ও উত্তর প্রদেশ, বাকুড়া ইত্যাদি অঞ্চলের চাষীদেরকে চা শ্রমিক হিসেবে সংগ্রহ করে। গরীব চাষীদের স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল উন্নত জীবনের। বলা হয়েছিল আসামের বাগানে “গাছ হিলায়েগা তো পয়সা মিলেগা”। ইংরেজদের ছলনা আর দালালদের প্ররোচনায় আজীবন কাজের শর্তে সেই যে বাগানে প্রবেশ করেছিল শ্রমিকেরা তার ধারবাহিকতা আজও বর্তমান।
নিজেদের চিরচেনা ভিটেমাটি ছেড়ে আসা শ্রমিকেরা আসামে এসে দেখে এখানে উন্নত জীবনের স্বপ্নতো দূরের কথা, উদয়াস্ত পরিশ্রম আর জন্তু জানোয়ারের সাথে প্রতিনিয়ত লড়াই করে বেঁচে থাকাই দায়। অচেনা অজানা আর আধুনিক সভ্য জগৎ থেকে বঞ্চিত চা শ্রমিকদের জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। শুরু থেকেই চা শ্রমিকদের কোন স্থায়ী আবাস ভূমি দেয়া হয়নি, দেয়া হয়নি কোন নাগরিক সুবিধা। উপরন্তু চা শ্রমিকদের তখন বানানো হলো মধ্যযুগীয় দাস শ্রমিকদের মত। মালিক পক্ষের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে কোন চা শ্রমিক চা বাগান থেকে পালিয়ে গেলে তাকে ধরে এনে মারপিট করা ছিল আইনসম্মত। এমতাবস্থায় উদয়াস্থ শ্রম, রোগ-ব্যাধী আর দারিদ্রতাই হল চা শ্রমিকদের নিত্যসঙ্গী। নিত্যদিনের অন্নসংস্থানের জন্য যে শ্রমিকরা হিমশিম খায় তাদের পক্ষে আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলার সময় কোথায়…? তাছাড়া শুরু থেকেই চা শ্রমিকরা পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। এক বাগানের শ্রমিকদের অন্য বাগানে কাজের জন্য যেতে দেয়া হত না। আবার যেহেতু তারা ভারতের ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশের, ভিন্ন ভিন্ন গোত্রের মানুষ ছিলেন তাই তাদের সংহতি ও ভাষার মধ্যেও ভিন্নতা ছিল। অন্যদিকে সে সময়ে সংগঠিত তেমন কোন শ্রমিক আন্দোলনও ছিলনা যা তাদেরকে পথ দেখাবে। ফলে সংগঠিত কোন আন্দোলন তখন গড়ে তুলতে না পারলেও শ্রমিকরা মাঝে মাঝে বিদ্রোহী হয়ে উঠত। বিংশ শতকের শুরুর দিকে ভারতবর্ষে সংগঠিত শ্রমিক আন্দোলন গড়ে উঠলেও উনবিংশ শতকের শেষ দিকে বিপিন চন্দ্র পাল চা শ্রমিকদের নিয়ে কিছু কাজ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন।
এদিকে ১৯১৭ সালে পৃথিবীর ইতিহাসে সংগঠিত হয় এক অভূতপূর্ব ঘটনা। রাশিয়ার শ্রমিকরা লেনিনের নেতুত্বে প্রতিষ্ঠা করেন “সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়ন”। সমাজতান্ত্রিক এই বিপ্লবের প্রভাব পড়তে থাকে গোটা পৃথিবীতে এবং তারই প্রভাবে গতির সঞ্চার হয় ভারতবর্ষের শ্রমিক আন্দোলনে। বিভিন্ন বাগানের শ্রমিকরা পালন করতে থাকে স্বতস্ফূর্ত শ্রমিক ধর্মঘট। চা শ্রমিকদের স্বতস্ফূর্ত আন্দোলনে আরো খড়গহস্থ হয় বাগানের মালিকরা। অন্যদিকে ভারতবর্ষে তখন বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন দানা বেধে উঠে। ক্সতরি হয় সারা ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের প্রবল জোয়ার, যার প্রভাব শ্রমিকদের মধ্যেও পড়ে। ১৯২০ সালে আব্দুল করিমের সভাপতিত্বে সুরমা উপত্যকায় রাজ‣নতিক আন্দোলনে বিদেশী মালিকদের ব্যবসা ও চা বাগান বয়কটের প্রস্তাব গ্রহণের ফলে চা শ্রমিকদের চা বাগান থেকে বের হয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়। বৃটিশ বিরোধী অসহযোগ আন্দোলনের প্রভাব এবং নিজেদের জীবনের দুর্দশা থেকে মুক্তির নেশা লড়াইয়ের ময়দানে নামিয়ে আনে চা শ্রমিকদের। চা শ্রমিকগণ ঐক্যবদ্ধভাবে বিদ্রোহ ঘোষণা করে বাগান বর্জন করে রাস্তায় নেমে আসেন। তারা সিদ্ধান্ত নেন তাদের নিজ আবাসভূমিতে ফিরে যাবেন। মালিকদের ভয়ভীতি, দালালদের যুক্তি-তর্ক, দে․রাত্ম সবকিছু তোয়াক্কা না করে চা শ্রমিকরা নিজেদের আবাসভূমিতে ফিরে যাওয়ার জন্য বেরিয়ে আসলেও তারা জানতেন না কিভাবে নিজ ভূমিতে ফিরতে হয়। শুধু জানতেন রেলযোগেই ফিরতে হবে তাদের নিজ আবাসভূমিতে। মালিকদের নির্দেশের কারণে রেলস্টেশনে গিয়েও টিকেট পেলেন না চা শ্রমিকরা। এক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হয় নিজ মুল্লুকের উদ্দেশ্যে রেল ল্াইন ধরে পায়ে হেঁটেই রওয়ানা দিবেন তারা। শুরু হলো ঐতিহাসিক “মুল্লুকে চল” অভিযান। পন্ডিত দেওশরন এবং পন্ডিত গঙ্গাদয়াল দীক্ষিতের নেতৃত্বে প্রায় ৩০ হাজার চা শ্রমিক ঐক্যবদ্ধভাবে নেমে আসেন এই “মুল্লুকে চল” অভিযানে।
রেললাইন ধরে হাটতে থাকেন চা শ্রমিকরা। গন্তব্য চাঁদপুর। দীর্ঘ এ অভিযাত্রায় দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের নির্দেশে শুরু থেকেই চা শ্রমিকদের পাশে ছিলেন কংগ্রেস নেতা যথীন্দ্র মোহন সেন। চলার পথে মাঝে মাঝে বিশ্রাম নিয়ে আগাতে থাকেন শ্রমিকরা। যাত্রাপথে গ্রামবাসীরা তাদের দুঃখ, দুর্দশার কথা শুনেছেন এবং খাবার পরিবেশন সহ অন্যান্য সহযোগিতা প্রদান করেছেন। পথে অনেক শ্রমিকের মৃত্যুও ঘটে। অনেক কষ্ট ভোগ করে শত শত মাইল পথ পায়ে হেটে শ্রমিকরা ১৯২১ সালের ২০শে মে পে․ছান চাঁদপুর মেঘনা ঘাটে। চা শ্রমিকরা চাঁদপুর মেঘনা ঘাট থেকে জাহাজ যোগে কলকাতা যেতে চাইলেন। কিন্তু শ্রমিকদের কাছে ভাড়ার টাকা না থাকার কারণে জাহাজ কর্তৃপক্ষ তাদেরকে জাহাজে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। অনেক অনুনয়, অনুরোধ করার পরও জাহাজ কর্তৃপক্ষের মন টলানো না গেলে চা শ্রমিকরা জোর করে জাহাজে উঠতে চাইলেন।
এদিকে বাগান কর্তৃপক্ষ চা শ্রমিকদের বাধা প্রদান করার জন্য পূর্ব থেকেই ছিল তৎপর। তারা তাদের প্রতিনিধি চাঁদপুরে প্রেরণ করে স্থানীয় প্রশাসন, কমিশনার কিরন চন্দ্র দে, ম্যাজিস্ট্রেট সুশীল সিং সহ অন্যান্য সাহেবদের সহযোগিতায় চা শ্রমিকদের বিদ্রোহ দমন করার পরিকল্পনা করে রাখে। শ্রমিকরা জোর করে জাহাজে উঠতে চাইলে বৃটিশ সরকারের গোর্খা বাহিনী শুরু করে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ আর নির্যাতন। মুহুর্তেই শত শত চা শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেলেন। আহত হলেন হাজারো শ্রমিক। শুধু জাহাজ ঘাটেই নয়, চাঁদপুর রেলস্টেশনে অপেক্ষামান শ্রমিকদের উপরেও ‣পশাচিক নির্যাতন চালানো হয়। গোর্খা বাহিনীর আক্রমণে জাহাজ ঘাট এবং রেল স্টেশনে সেদিন এক নারকীয় পরিবেশের সৃষ্টি হয়। অসহায় চা শ্রমিক এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের হত্যা করে লাশের পেট কেটে নদীতে ফেলা হয় যাতে করে লাশগুলো নদীতে ডুবে যায়। চা শ্রমিকদের এই বিদ্রোহকে দমন করার জন্য পুলিশ আন্দোলনের প্রধান দুই নেতা পন্ডিত গঙ্গা দয়াল দীক্ষিত ও পন্ডিত দেওশরন সহ অসংখ্য চা শ্রমিকদের গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। চা শ্রমিকদের উপর এই বর্বরোচিত অন্যায় আক্রমন আর জেল কর্তৃপক্ষের দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদে দীর্ঘ অনশন করে আত্মাহুতি দেন পন্ডিত গঙ্গা দয়াল দীক্ষিত।
“মুল্লুকে চল” অভিযানে রেলপথ ধরে হাটতে থাকা চা শ্রমিকরা শ্লোগান তুলেছিল- “গান্ধীজী কা জয়” “বন্দে মাতরম”। কিন্তু চা শ্রমিকদের এই আন্দোলনে সমর্থন জানানোর জন্য মাহাত্মা গান্ধীকে অনুরোধ জানানো হলেও আপোষকামী ধারার রাজ‣নতিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে গান্ধিজী এই আন্দোলকে সমর্থন করলেন না বরং চা শ্রমিকদেরকে চা বাগানে ফেরত যাওয়ার পরামর্শ দিলেন। অন্যদিকে চা শ্রমিকদের উপর সংগঠিত এই বর্বর হত্যাকান্ডের খবর শোনামাত্র চাঁদপুরে ছুটে আসেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস। তিনি স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে নিয়ে আহত এবং আন্দোলকারী চা শ্রমিকদের পাশে দাড়ান। চা শ্রমিকদের আন্দোলনে ভূমিকা রাখেন বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্যসেন সহ বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের অনেক নেতাকর্মী। চা শ্রমিকদের দাবীর সমর্থনে তখন আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের শ্রমিকগণ শুরু করেন রেলওয়ে শ্রমিক ধর্মঘট। দেশবন্ধু চিত্ত রঞ্জন রেলওয়ে শ্রমিকদের পাশে দাড়ালেন। শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান রাখলেন ‘তোমরা ধর্মঘট চালিয়ে যাও’। চা শ্রমিকদের উপর সংগঠিত এই বর্বর হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে প্রায় ২৫ হাজার রেল শ্রমিক ধর্মঘটে সামিল হয়েছিলেন। চা শ্রমিকদের সাথে সেদিন একাত্ম হয়েছিলেন রেলশ্রমিক, জাহাজ শ্রমিক সহ ছাত্র-জনতা। এই বিদ্রোহ এবং শ্রমিক আন্দোলনের পর বাধ্য হয়েই ইংরেজ সরকার রয়েল কমিশন গঠন করে শ্রমিকদের গিরমিট প্রথা বাতিলের ঘোষণা প্রদান করে এবং শ্রমিকদেরকে রেশনসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা প্রদান করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাগানে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। যে শোষন নিপিড়নের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ বিদ্রোহ গড়ে তোলেছিল প্রতিবাদী হাজারো চা শ্রমিক, সময়ের পরিক্রমায় সেই শোষন নিপিড়ন আজও বিদ্যমান। বৃটিশ শোষনের পরবর্তীতে পাকিস্তানি শাসন শোষনের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে চা শ্রমিকরা বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। অথচ স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরেও চা শ্রমিকরা তাদের ভূমির অধিকার, ন্যূনতম মজুরি, শিক্ষা, চিকিৎসার অধিকার থেকে বঞ্চিত। ফলে চা শ্রমিকদের আজও লড়তে হচ্ছে ভূমি, ন্যূনতম মজুরি, শিক্ষা, চিকিৎসা অধিকার আদায়ের জন্য।
চা শ্রমিকদের আন্দোলনের লড়াকু এই ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে চা শ্রমিক আন্দোলন বেগবান করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ এনার্কো-সিন্ডিক্যালিস্ট ফেডারেশন ও ২০০০ সাল থেকে এবং বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন ২০০৮ সাল থেকে ২০ মে কে “চা শ্রমিক দিবস” হিসেবে পালন করে আসছে। মালিক শ্রেণীর নির্মম অত্যাচার আর বর্বর নিপীড়নের মুখে চা শ্রমিকদের সেদিনের আন্দোলন পুরোপুরি সফল হতে পারেনি। কিন্তু চা শ্রমিকদের রক্তস্নাত এই বিদ্রোহ ক্সতরি করেছে নতুন ইতিহাসের, পথ দেখিয়েছে সংগ্রামের। দেড় শতাধিক বছর ধরে বংশ পরম্পরায় নির্যাতিত, বঞ্চিত চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে আন্দোলন সংগ্রামের চেতনার উৎস হয়ে থাকবে চা শ্রমিকদের এই “মুল্লুকে চল ” আন্দোলন।